প্রিয় পাঠক আপনি কি খেজুরের গুড় আসল নাকি নকল চেনার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলটিতে আমরা আলোচনা করব খেজুরের গুড় আসল নাকি নকল চেনার উপায় সম্পর্কে।
খেজুরের গুড় আসল নাকি নকল চেনার উপায় সম্পর্কে আপনাদের জন্য ধাপে ধাপে নিচে আলোচনা করা হয়েছে। যেগুলোর মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই খেজুরের গুড় সম্পর্কে জানতে পারবেন। চলুন তাহলে আর দেরি না করে খেজুরের গুড় আসল নাকি নকল চেনার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন।
ভূমিকা
আমাদের আজকের আর্টিকেলটি হল খেজুরের গুড় আসল নাকি নকল চেনার উপায় সম্পর্কে। খেজুরের গুড় সাধারণত শীতের সময় বেশি পাওয়া যায়। আপনারা প্রায় সকলেই খেজুরের গুড় চিনেন। তবে খেজুরের গুড় বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। আর তাই আসল খেজুরের গুড় চেনা অত্যন্ত জরুরী। কিছু কিছু ধাপ অনুসরণ করার মাধ্যমে খেজুরের আসল গুড় চেনা সহজ। কারণ বর্তমানে প্রায় খেজুরের গুড় নকল হয়ে থাকে।
আর তাই খেজুরের আসল গুড় চেনা অত্যন্ত জরুরি। খেজুরের গুড়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে এবং তার সাথে কিছু কিছু উপকারিতাও রয়েছে। তাই খেজুরের গুড় চিনতে হলে খেজুরের গুড় সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। আর আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে জানতে পারবেন খেজুরের গুড় আসল নাকি নকল চেনার উপায় সম্পর্কে।
খেজুরের গুড় চেনার উপায়
খেজুরের গুড় সাধারণত বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তাই আসল খেজুরের গুড় চেনা অত্যন্ত জরুরী। কিছু কিছু উপায় অবলম্বন এর মাধ্যমে খেজুরের গুড় চেনা সহজ।
খেজুরের গুড় চেনার উপায় গুলো হলো:
- যখন খেজুরের গুড় কিনবেন তখন একটু গুর মুখে দিয়ে দেখুন, যদি নোনতা স্বাদ হয় তাহলে বুঝতে হবে গুড় আসল নয় বা ভেজাল আছে।
- পাটালি গুড় কেনার সময় গুড়ের দুই ধার আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিন যদি নরম হয় তাহলে খাঁটি আর যদি শক্ত হয় তাহলে বুঝবেন এর মধ্যে ভেজাল আছে।
- সাধারণত গুড়ের রং গাঢ় বাদামি রংয়ের হয়ে থাকে। যদি গুড়ের রং হলুদ হয় তাহলে বুঝবেন এতে কেমিক্যাল মেশানো হয়েছে।
- খেজুরের গুড় কেনার সময় ভালোভাবে লক্ষ্য করবেন যে, যদি দেখেন যে গুড়ের রং সাদাটে হয় তাহলে বুঝবেন ওই গুড়ে প্রচুর চিনি মেশানো হয়েছে।
- খেজুরের গুড় যদি তিতা স্বাদের হয় তাহলে বুঝবেন অনেক জ্বালানো হয়েছে। এ গুড় না কেনায় ভালো কারণ এটি দিয়ে কিছু তৈরি করলে তা ভালো হবে না।
তাহলে বুঝতে পেরেছেন খেজুরের গুড় চেনার উপায় সম্পর্কে।
আসল খেজুরের গুড় তৈরির নিয়ম
খেজুরের গুড় বিভিন্ন পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। তবে খেজুরের আসল গুড় তৈরির কিছু বিশেষ নিয়ম রয়েছে। যে নিয়ম গুলোর মাধ্যমে খেজুরের গুড় তৈরি করা হয়। খেজুরের রস গাছ থেকে পেড়ে বেশিক্ষণ রেখে দিলে তা নষ্ট হয়ে যায়। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি চুলায় জাল দিয়ে গুরু তৈরি করতে হবে। প্রথমে খেজুরের রস ছেঁকে একটি বড় পাত্রে ঢেলে চুলায় জাল দিতে হয়। জাল দিতে দিতে একসময় এটি ঝোল করে পরিণত হয়।
যদি পাটালি তৈরি করতে হয় তাহলে এই গুড় আরো জাল দিয়ে আরো ঘন করে কলা পাতা বা ছাঁচে ঢেলে দিতে হয়। পরে ঠান্ডা হলে পাটালিতে রুপান্তরিত হয়। আর এভাবেই তৈরি করা হয় আসল খেজুরের গুড়। তাহলে বুঝতে পেরেছেন কিভাবে আসল খেজুরের গুড় তৈরি করা হয়।
খেজুরের গুড়ের উপকারিতা
সৃষ্টিকর্তা যে খাবারটি আমাদের জন্য দিয়েছেন তার প্রত্যেকটির কিছু না কিছু উপকারিতা আছে। তেমনি খেজুরের গুড়ের উপকারিতা আছে বেশ। প্রাচীনকাল থেকে এই বাংলায় খেজুরের গুড়ের প্রাপ্যতা অনেক। খেজুরের গুড়ে অনেক উপকারিতা রয়েছে।
খেজুরের গুড়ের উপকারিতা গুলো হলো:
- খেজুরের গুড় খাওয়ার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
- খেজুরের গুড় খাওয়ার মাধ্যমে লিভার ভালো থাকে।
- সর্দি কাশি নিরাময় করার ক্ষেত্রেও খেজুর গুড় বেশ উপকারী।
- রক্ত পরিষ্কার রাখার ক্ষেত্রেও খেজুর অনেক উপকারে আসে।
- খেজুরের গুড় খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
- গুড়ে আছে প্রচুর পরিমাণ আয়রন। আর খেজুরের গুড় খাওয়ার মাধ্যমে রক্ত বৃদ্ধি হয়।
- খেজুরের গুড় মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করে।
- ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে খেজুরের গুড় অনেক উপকারী।
খেজুরের গুড়ের অপকারিতা
খেজুরের গুড়ের যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি অপকারিতাও রয়েছে। খেজুরের গুড়ের অপকারিতা গুলো হলো:
- অতিরিক্ত খেজুরের গুড় খাওয়ার মাধ্যমে ওজন বাড়তে পারে।
- গুড় যদিও চিনির চেয়ে ভালো কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে গুড় খাওয়ার ফলে বাড়বে ব্লাড সুগার।
- আবার অতিরিক্ত গুড় খাওয়ার ফলে হতে পারে বদহজম।
- গরমের সময় অতিরিক্ত খেজুরের গুড় খেলে নাক থেকে রক্তপাতও হতে পারে।
- অতিরিক্ত খেজুরের গুড় খাওয়ার ফলে প্যারাসাইটিক বা পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
যেভাবে চিনবেন আসল গুড়
বর্তমান সময়ে আসল গুড় চেনা খুবই কঠিন। কারণ বিভিন্ন কেমিক্যাল এর দ্বারা গুড় তৈরি করা হয়। আর যেগুলো চেনা অত্যন্ত দুষ্কর। তবে কিছু কিছু উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে আসল গুড় চেনা যেতে পারে। বেশিরভাগ গুড়েই প্রচুর পরিমাণে চিনি মেশানো থাকে। আর চিনি মেশানো বোর শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই আসল গুড় চেনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আবার অনেকেই কেমিক্যাল ব্যবহার করার মাধ্যমে ঘর তৈরি করে। আর সেগুলো খেতে বেশ সুস্বাদু হলেও শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকর। তাই আসল গুড় চেনার সম্পর্কে অবশ্যই জানা থাকা উচিত। কারণ গুড় হচ্ছে শরীরের জন্য অনেক উপকারী। তাই কিছু বিশেষ বিশেষ উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে আসল গুড় চেনা সম্ভব।
আসল গুড় চেনার উপায়গুলো হলো:
- কেনার সময় একটু ঘুর ভেঙে নিয়ে চেখে দেখুন। নোনতা সাদের হলে বুঝবেন এই করে ভেজাল রয়েছে।
- গুড়ের ধার দুইটা আঙ্গুল দিয়ে চেপে দেখবেন। যদি নরম লাগে বুঝবেন ভালো মানের আর যদি বেশি শক্ত হয় তাহলে বুঝবেন ভেজাল রয়েছে।
- সাধারণত গুড়ের রং গাঢ় বাদামী হয়। হলদেটে রঙের গুড় হলে বুঝতে হবে অতিরিক্ত রাসায়নিক মেশানো।
- কৃত্রিম চিনি মেশানো গুড় দেখতে খুব চকচকে হয়।
উপসংহার
আজকের আর্টিকেলটি ছিল খেজুরের গুড় আসল নাকি নকল চেনার উপায় সম্পর্কে। বর্তমানে খেজুরের আসল গুড় পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। কারণ বেশিরভাগ গুড়ে প্রচুর পরিমাণে চিনি মেশানো থাকে। আবার অনেক গুড়ে অতিরিক্ত পরিমাণে রাসায়নিক মেশানো থাকে। যেগুলো খাওয়া শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
খেজুরের গুড় শরীরের জন্য উপকার কিন্তু গুড়ে ভেজাল থাকলে তার শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই খেজুরের গুড় কেনার আগে অবশ্যই আসল গুড় চিনতে হবে। কিছু কিছু বিশেষ উপের মাধ্যমে আসল গুড় চেনা সহজ। উপরিউক্ত অবলম্বন গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজে আসল গুড় চিনতে পারবেন।
আশা করি তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি খেজুরের গুড় আসল নাকি নকল চেনার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।